কবি :
গ্লাদিস সেপেদা
দেশ :
আর্হেন্তিনা,
ভাষা :
স্প্যানিশ
কবি-পরিচিতি
: নব্বই দশকের আর্হেন্তিনীয় কবি গ্লাদিস সেপেদা মাদ্রাগোরা ছদ্মনামে স্পেনীয়
সাহিত্যজগতে পরিচিত, জন্ম ১৯৬৩ সালে রাজধানী বুয়েনোস আইরেসে। আজন্ম সাহিত্যই জীবনযাপন
তাঁর, বিভিন্ন শিল্প ও সাহিত্য কর্মশালার সংগঠক, কবিতাকে অডিওভিশ্যুয়াল মাধ্যমে
প্রকাশ করতে নিজের দেশে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন, কবিতা পাঠ করেছেন মেক্সিকো, চিলে,
ইউরোপে এবং আমন্ত্রিত কবি হিসেবে বিভিন্ন দেশের বইমেলায়। বিভিন্ন দেশের নতুন
কবিদের কবিতা মেলে ধরেন আর্হেতিনীয় রেডিও-টিভিতে, বেশ কিছু সাহিত্যপত্রিকার
সম্পাদিকা এবং ‘লাকবেরনা’ সহ তিনটি অনলাইন পত্রিকার পরিচালিকা। পেয়েছেন আর্হেন্তিনার
সাহিত্য পুরষ্কার আর কলম্বিয়ার সিনে পুরষ্কার। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই :
আভেইয়ানেদার কবি, ঘুমাও শব্দ, শান্তির কাব্যগ্রন্হ।
কবিতা
:
অকাজের
জিনিসপত্র
"যা
গেছে তা গেছে, নতুন দিনের ঘুম ভাঙে নতুন রাজত্বের জন্য"
প্রথম
কেতজলকোয়াতলের শ্রুতি (মেহিকো)
আগুনের
পাখি
ধারণ করে
ছাইয়ের বৃষ্টিপাত
নীরবে
তার
চিৎকার চোখের জল ফেলে
আর ছায়ার
পোশাকপরা চোখ তার আগুনমুখী
দিগন্তরেখা
আঁকে তার
ভাঙা আলগা কঙ্কাল
একাকী
উড়ানের উপচ্ছায়ার
মাঝে
সাদা
পালকের ঘুমের সময়
চুরি করে
সূর্যের
তুরপুন বানায় তার বাসা
সে এবং
তারা পান করে
মরুভূমির
তৃষ্ণার্ত জল
ওরা আরও
কাছে আসে
দুপ্রান্তের
ডানা ঝাপটানি থেকে
বিনিদ্র
সকালের আবির্ভাবে
দর্পণে জল
মুখের কোনও
বয়স নেই
শুধু বয়ে যায়
মহাবিশ্বের সূক্ষ্ম আঙরাখা
এই অনন্তের
অস্থিরতা ঢেকে দিতে
একটি নিষিদ্ধ ফল
আর
ইডেনের বাগান
আমাদের
জন্য কেউ কোথাও অপেক্ষা করে না
একটি লোক
এবং তার টুপি
একটি লোক
তার টুপি নিয়ে
একটি
বেহালা, হাতে তার পদচিহ্ন
রাস্তা
তাকে রাতবিদ্ধ করে
ছুরির মতো
তার সান্ধ্যবাতাসে
প্রতিধ্বনি
চিবিয়ে খায় তার গলা
মন
তৃষ্ণা
ক্ষুধা
যে নারীর
চেয়ে বেশি ভালবাসে ভাগ্যকে
যে তার
ঘড়ির পালস্ ছেড়ে বেরিয়ে আসে
জিরিয়ে
নেয় আর হামাগুড়ি দেয়
তার আত্মঘাতী
পুতলি নিয়ে
তার
প্যান্টের পকেটে
কিছু
ভালবাসার গান
সে শূন্য
করে দেয়
খরচ করে
ফেলে তার রক্ত
উরুসন্ধির
মাঝে
বইয়ের
প্রতিটা পাতা
চাবি
খুঁজে পায় না
নাস্তানাবুদ
হয় সে
নৌকায়
রাখা বোতলে
চাকুরি
হারাবার টরেটক্কা
যথারীতি
বৃহস্পতিবার চলে যায়
জুতো
আমার বাম
জুতোর
গর্তের
ফাঁক দিয়ে
দেখি
পৃথিবী
মহান
গোপনীয়তার মাঝে
যার শুরু
স্বপ্নের
ভিতরে
যেমন আমার
সারল্যময় দেওয়াল
অন্যের
হৃদয়ে
আর আমার
হাতে ধরা কবিতায়
ভাবাবেগের
প্রতিবেশ যেন
আমার ডান
জুতোর গর্তের ফাঁক দিয়ে
দেখি
ভবিষ্যৎ
অর্ধনিমিলিত
চোখে
আমার ভূতের
অসীম যন্ত্রণা
বিপজ্জনক
এক স্বাদ যে ছড়িয়ে পড়ে
হাড়েমজ্জায়
নগ্নতা
নিয়ে কীভাবে হাঁটা যায়
দু পায়ের
পাতায়?
আর অর্জন
করা যায় পদচিহ্ন
যারা
নির্মাণ করে গোধূলিবেলায়
রামধনুময়
দিগন্তরেখা
নৈঃশব্দ্যের
দমবন্ধ অবস্থায় সম্মতির দৃষ্টিপাত
কিন্তু
মানবতা সরে যায় তার
ক্রুশবিদ্ধ
গোড়ালি নিয়ে
যখন
বৃষ্টি
ধুয়ে দেয়
পুরুষের দাগ আর বিস্মৃতি
স্বপ্ন
দেখি
লোকে
ভুলেছে স্মৃতি
জীবন
ধরে টান মেরে আঁচড়িয়েছিল
যতক্ষণ
না হয়েছিল ক্ষতবিক্ষত
ছেঁটে
ফেলেছিল সব সত্যি
শ্বাস
নিত তারাহীন রাতের
যন্ত্রণা
শুধু
রাবার ও পারদের
উপগ্রহের
নীলনকশা
বিকৃত
করেছিল চারপাশ
সহবাস
করেছিল মাতাল আর অজগর
যতক্ষণ
না নিথর হয়েছিল শরীর
ইথালীয়
ঘামে স্নাত
এই
ভেবে মরে গেল
যে
মেঘ চুমু খাচ্ছিল তার ঘুমঘোর চোখে
কবি
: হোসে মারিয়া এগুয়েন
দেশ
: পেরু
ভাষা
: স্প্যানিশ
কবি-পরিচিতি
: কবির
জন্ম রাজধানী লিমায় ১৮৭৪ সালে এবং তিনি মারা যান বারবানকোতে ১৯৪২-এ, যেখানে তিনি জীবনের
অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন। অর্থনৈতিক অস্বাচ্ছন্দ্য ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। জলরঙে ছবি আঁকতেন।
আলোকচিত্ৰশিল্পী হিসেবেও তাঁর খ্যাতি ছিল। ছিলেন অন্তর্মুখী এবং সংবেদনশীল। তাঁর প্রকাশিত
চারটি বই : সিম্বলিকাস, কানসিয়ন দে লাস ফিগুরাস, সোম্ব্রাস এবং রোনদিনেলাস।
কবিতা
:
ঘোড়া
হেঁটে
যাচ্ছিল সে পথে
ক্ষয়াটে
চাঁদের পানে
আদ্যিকালের
যুদ্ধে
মৃত
এক ঘোড়া।
তার
আবছায়াময় শিরস্ত্রাণ
কেঁপে
ওঠে, পিছলে যায়;
ডেকে
ওঠে কর্কশ হ্রেষা
তার
দূরবর্তী কণ্ঠস্বরে।
ব্যারিকেডের
ছায়ান্ধকার
কোণে,
শূন্য
দৃষ্টিতে,
আতঙ্কে
থেমে যায় সে।
অনেক
পরে শোনা যায়
তার
পদধ্বনি,
ধূ
ধূ পথ
আর
ধূলিসাৎ প্লাজার মাঝে।
লাল
রাজারা
ভোর
থেকে
যুদ্ধে
রত দুই লাল রাজা
সোনার
বর্শা নিয়ে।
সবুজ
গহীন জঙ্গলে
আর
নীলচে লাল পাহাড়ে
কাঁপন
ধরে বিরাগে।
শ্যেন্
রাজারা যুদ্ধে রত
নীলচে
সোনার
দূরের
দেশে।
ক্যাডমিয়ামের
আলোয়
কৃষ্ণকায়
রাগী রাজাদের
দেখায়
যেন ক্ষুদ্র।
রাত্রি
নামে
যুদ্ধ
চলে
শত্রু
দুই লাল রাজায়।
মৃত
মানুষেরা
বিষাদমাখা
আকাশের নীচে
চলছে
পথে
মৃত
দুই মানুষ
অসীম
হাহাকারে।
নিঃশব্দ
বাতাবরণে
হতাশ্বাস
পদচারণে
উইলো
আর লিলির পানে
মৃত্যু
আসে শৈত্য শিহরণে।
পরিত্যক্ত
পথে,
শ্বেতোজ্জ্বল
করে,
দিনযাপনের
উৎসবে মাততে চেয়ে,
জীবন
ভালোবেসে বাঁচতে চেয়ে।
যাওয়ার
পথে কি এক আশায়
মৃত
মানুষ খোঁজে,
চোখ
জোড়া নিবদ্ধ তার এক কাস্তেয়
নিমগ্ন
কার বিষণ্ণ ছায়া।
কুয়াশাবৃত
বন্ধ্যা এক রাতে
যন্ত্রণা
আর ভয়ের সাথে,
দূরের
পথিকেরা হেঁটে যায়
অন্তহীন
পথে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন